সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

একটি টয়লেট সমাচার - হাছিবুল মাওলা





টয়লেট আমার সবচেয়ে প্রিয় স্থান গুলোর মধ্য অন্যতম। নিউটনের আপেল পড়ার কাহিনী শুনার পর লোভে পড়ে নিজ মাথায় কাঁঠাল পরবে এই আশায় প্রিয় স্থান বানিয়েছি ভেবে কেউ লজ্জায় পেলবেন না। আসলে এর পিছনে কিছু  পারিবারিক ইতিহাস আছে। ছোটবেলায় সবাই ই আদর পাই, পরিবারের একমাত্র ছেলে হওয়ায় আমি একটু বেশি পাইতেছিলাম। কিন্তু এই আদর কপালে বেশিদিন জুটলো না। জীবনে হাজির হল পড়ালেখা নামক বিভীষিকা।😭

 যেই মা কোনদিন একটু রাগ করে কথাও বলে নি, সব দুষ্টুমি নিরবে সয়েছে সেই মা ও একদিনে বদলে গেল😲  সামান্য অ আ এর জন্য কিনা  মার খেলাম! সেদিন থেকেই পড়ালেখা আমার ঘোর শত্রু হয়ে গেছিল। বিচানা ছাড়বার পর থেকে আবার বিছানায় পেরার আগ পর্যন্ত পড়ালেখারে সেই যাবত শেখা সব গালি দিততে থাকতাম।

 সকাল বেলা উঠেই মা পাঠাতো ওয়াশরুমে, বের হলেই আরবি পড়া, এরপর স্কুলের পড়া, এরপর স্কুল। জীবনটা তেতো হয়ে উঠেছিল। একদিন সকালে উঠে যখন টয়লেটে গেলাম আর  ঝুরে ঝুরে ভাবছিলাম অতিত ইতিহাস আর পড়ালেখার ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করতেছিলাম তখনি পাই এক অসাধারণ, ঝকঝকে (আমার ভাষায়) বুদ্ধি। ভাবলাম যদি আমি দেরিতে বের হই এখান থেকে  তাহলে কি হবে?  সামান্য পড়তেই স্কুলের সময় হয়ে যাবে, আহা! আর বসে বসে অই বিরক্তিকর পড়ালেখা করা লাগবেনা। যেই ভাবা সেই কাজ এক বসায় পুরো ১৫ মিনিট পার, মা যদিও একবার ডেকে গেছিল। 

সে যাই হোক সেদিন থেকে আমার টয়লেট প্রেম শুরু হয়। আর দিন দিন এই সময়টাও বাড়তে থাকে আর কমতে থাকে পড়ার সময়। মায়ের কানমলা যদিও খেয়েছি অনেকবার কিন্তু মনকে বুজিয়েছি তা চিরুনির আঘাত, পাখার লাঠির আঘাত ইত্যাদির চেয়ে নেহাৎ ই কম।

 একদিন দুইটা ইংরেজি শব্দ শিখেছিলাম peace=শান্তি আর time=সময়, সেদিন আমার এই টয়লেটে কাটানো সময়ের নাম দিয়েছিলাম পিচ টাইম বা শান্তির সময় হিসেবে। 

সে যাইহোক, একদিন হঠাৎ করে পিচ টাইম বাড়িয়ে দিলাম ৩৫ মিনিট এ। ফলটা হল ভয়ঙ্কর, খোজ না পেয়ে সবাই খোজ লাগালো হারিয়ে গেছি ভেবে, পানিতে পড়েছি ভেবে জাল নিয়ে নেমে ও গেল কয়েকজন, যখন বের হইছি তখন দেখলাম বাড়িটা যেন অন্যরকম, মা কাঁদছে, পাড়া প্রতিবেশি হাজির। শুনলাম এক দাদি মাকে কোন খনকার(অলৌকিক খমতাধর কবিরাজ) এর কাছে যেতে বলছে, সে নাকি বলে দেবে  আমায় কোন কল্লা কাটা(কিডন্যাপার জাতীয় কিছু) নিয়ে গেছে। আমি বের হয়ে আস্তে আস্তে মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।  দেখলাম পরিচিত সবাই ভূত দেখার মত চমকে উঠে কেমন করে তাকিয়ে আছে।  মা ও প্রথম অমন ভাবে তাকালেও পর মুহূর্তে আমায় ধরে গগনবিদারী কান্না শুরু করে দিয়েছিলেন।  আমি ভোঁদাই এর মত তাকাইয়াই ছিলাম শুধু। 

 পর মুহূর্তে শুরু হল জিজ্ঞাসাবাদ। কই ছিলাম? কি করছিলাম? কেউ আমায় লুকিয়ে রেখেছিল কিনা? কারো দেয়া কিছু খাইছিলাম কিনা? প্রশ্নের পর প্রশ্ন হচ্ছিল আর আমি সেই একই ভাবে তাকাইছিলাম। পরে যখন বললাম আমি টয়লেটে ছিলাম সবাই এবার অন্য দৃষ্টিতে তাকাইলো প্রশ্নের ধাঁচ ও বদলে গেল। বলল, যে লুকাই রাখছিলো তার দাঁত কেমন? মাথায় শিং আছে তাইনা? চোখ লাল লাল?ইয়া লম্বা লম্বা কানের লতি? তখন এসবের কিছু না বুঝলেও পরে বুঝেছিলাম আমায় নাকি টয়লেটে ও খুঁজেছে পায়নি😲 মুরুব্বিরা বলে বাচ্ছাদের সাথে নাকি কি থাকে(অদৃশ্য)  যা তাদের লুকিয়ে রাখে, আমায় ও নাকি তারাই লুকিয়ে রেখেছিল 👏👏👏

যাইহোক এর সমাধান আজো হয়নি কিন্তু এর পর কিছুটা শুধরেছিলাম মানে পিচ টাইম কমিয়েছিলাম...

অনেকদিন পার হয়ে গেছে 

এখন কলেজে পড়ছি সেই অভ্যাস পুনরায় গড়েছি বহুদিন হল।  কিন্তু সমস্যা হচ্ছে হোস্টেলের টয়লেট নিয়ে, এটায় ২০ মিনিট যেতে না যেতেই হালারা(বন্ধুরা) দরজা পেটানো শুরু করে। বুঝিনা এই গন্ধযুক্ত টয়লেটে ডুকার জন্য ওদের এত আগ্রহ কেন 😜

এখন টয়লেটে বসে বসে এই স্বইতিহাস টা লিখছি আর দেখুন কোন হালায় যেনো অসময়ে ডিস্টার্ব শুরু করছে,  গত পাঁচ মিনিট যাবত দরজা পিটিয়েই চলছে। এদের একটু ও ধৈর্য নেই, মাত্র ৪৫ মিনিট হইছে বাথরুমে ডুকেছি, একটু  অপেক্ষা ও করতে পারেনা। এগুলারে মানসিক ডাক্তার দেখানো উচিত 😎

 যাইহোক আজ এই পর্যন্তই😊

একটা হিসাব বাকি আছে ওইটা শেষ করেই বেরিয়ে যাব আশা করি😊

...

কাহিনী পুরোটা রঞ্জিত নহে😊

..






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফিরে দেখা ১

কার চোখে কে কেমন? তার চোখেই বা আমি কেমন? মানে কেমন ছিলাম? এইসব হাবিজাবি নিয়ে ভাবছে আদি। বন্ধুবান্ধব নিয়ে বেশ সুখেই ছিল। স্যার ও সম্মানীত বন্ধুরা এমনকি মাঝে মাঝে ওর আম্মুও ওকে দুষ্টুমির জন্য অতি আদরে বজ্জাতের কাঁদি বলে ডাকতো। সবাইকে হাসাতে ও ছিল এক্সপার্ট। কারো মন খারাপ থাকলে ভালো করার চেষ্টায় ওর থিওরিগুলো ছিল অব্যার্থ, অথচ আজ? :( অতিত! অনেক অনেক পুরনো অতিত হাতড়াচ্ছে সে। এখন বিকেল বেলা, সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। শিপের ধারে দাঁড়িয়ে সে দেখছে প্রকৃতির এই সৌন্দর্য। অনেক আগে একজনকে কথা দিয়েছিলো এমনি কোন বিকেলে দূরের সমুদ্রে ডুবতে থাকা সূর্য দেখবে দুজন মিলে। ডুবন্ত রক্তিম সূর্যের অন্তিম কিরণ যখন উঁচু পাহাড়ের মাথায় থাকবে তখন এমনি কোন সূর্য অংকিত টিপ তার শ্রী-কপালে পরিয়ে দিবে। আর সারারাত ওই কপালের টিপের আলোয়, পাহাড়ের ছায়ায় জেগে জেগে দুজন স্বপ্ন দেখবে। বহু স্বপ্ন। রাত জাগা শত রোমান্সের স্বপ্ন। প্রেম নদীতে ভাসমান তরীর স্বপ্ন। সহস্র গোলাপের সৃষ্টির স্বপ্ন। ফুটফুটে একটা বাচ্চার স্বপ্ন। যার মুখ থেকে তারা মা বাবা ডাক শুনবে।  ♥ কিন্তু আজ ওই সব স্বপ্ন গুলোই স্বপ্নে পরিণত হয়েছে।  :( শিপ

অনলাইন সেবা হাতিয়া অ্যাপ হাতিয়ার সকল ধরণের তথ্য ও রক্তদান কেন্দ্রিক একটি জনপ্রিয় মাধ্যম

 অনলাইন সেবা হাতিয়া অ্যাপ হাতিয়ার সকল ধরণের তথ্য ও রক্তদান কেন্দ্রিক একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। হাতিয়ার বিপুল পরিমাণ মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন তথ্য ও রক্তদাতা খুজতে  এই অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপটি ব্যবহার করেন।   অনলাইন সেবা হাতিয়া প্লে স্টোরে এই অ্যাপে রয়েছে হাতিয়াবাসীর জন্য বিভিন্ন গ্রুপের রক্তদাতাদের সম্পূর্ণ তথ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দর্শনীয় স্থান, ডাক্তার, Ambulance, পুলিশ সহ আরো অনেক সেবাসমূহ।  হাতিয়ার সর্ম্পকে, হাতিয়াবাসীর সর্ম্পকে পরিপূর্ণভাবে জানতে এই অ্যাপের বিকল্প নেই। এছাড়া দ্বীপ হাতিয়ার মনোরম সৌন্দর্য বেষ্টিত ইউনিয়ন নিঝুমদ্বীপ ও তার বিভিন্ন সৌন্দর্যময় এলাকা সর্ম্পকে ও জানা যাবে Online Sheba Hatiya মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।  এই অ্যাপের তথ্য ও সেবাসমুহ : Blood donation - রক্তদান ( রক্তদাতাগণ নিজেরা একটি মাত্র একাউন্ট খুলেই রক্তদান কর্মসূচি তে অংশগ্রহণ করতে পারেন ) হাতিয়ায় চলাচলরত শিপ বা জাহাজ এর নাম্বার ও তথ্যসমূহ হাতিয়ার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এর সম্পূর্ন তথ্য ও নাম্বার হাতিয়া উপজেলার প্রতিটি পর্যটন স্পট বা ভ্রমনের মত সুন্দর জায়গা সমূহের নাম ও বর্ণনা প্রতিটি ইউনিয়নের বিস্তারিত

মতলব - একটি মজার কান্ড

মতলব - একটি মজার গল্প -কি? অনেক্ষন যাবত দেখতেছি পিছন পিছন আসতেছেন, সমস্যা কি? আমায় ফলো করছেন কেনো? 😒 -শুনুন আমি অত্যন্ত বিনয়ের সাথেই আপনাকে বলছিযে আমি মোটেও কোন খারাপ উদ্দেশ্য আপনার পিছু নেইনি। 😊 -তা কোন মহৎ উদ্দেশ্যে নিয়েছেন? 😞 -আসলে হয়েছে কি অই আমি ব্যাচেলর মানুষতো তাই জামা কাপড় কাচতে একটু অসুবিধা হয় আরকি।  😊 -Then? -তো করিকি পোশাকের গন্ধ ঢাকার জন্য সেন্ট মেরে বের হই। 😊  কথায় আছেনা গন্ধে গন্ধ ঢাকে" হে হে  😆 -ভেটকানো লাগবেনা সামনে বলেন  😒 - কিন্তু আজ এই ছয়দিন না পরিষ্কার করা জামাটার গন্ধ দূর করতে গিয়ে দেখি সেন্ট শেষ।  😖 -এতো প্যাঁচাল বাঁধছেন কেনো? এসবের সাথে আমার পিছুনেওয়ার কি সম্পর্ক? 😒 -আসলে হয়েছেকি আপনি যখন আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আমার নাকে এক দারুণ সুভাষ পাচ্ছিলাম। 😊  আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কাপড় কাচার ভয়ে হয়ত আমি মরে গেছি,আর আপনাকে মানে স্বর্গের অপ্সরাকে দেখছি। পরে হাত কামড়াইয়া দেখি নাহ, জীবিত আমি বাস্তব আপনি সাথে সত্য আপনার গন্ধটাও  😊  তাই আপনার পিছু নিয়ে আপনার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছিলাম আরকি, যাতে আপনার মিষ্টি, মন ভোলানো হৃদয় দোলানো গন্ধটা আমার জামার ন